হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার মিরপুর বাজারে টাকা দেনা-পাওনাকে কেন্দ্র করে দুই পরগনার মধ্যে দ্বিতীয় দিনের মত আবারো ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সকাল ১১ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। এতে প্রায় ২ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। আহতদের নাম পরিচয় তাৎক্ষণিক পাওয়া যায়নি। এর আগে গত সোমবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত টা পর্যন্ত সংঘর্ষে লিপ্ত হয় মিরপুর ও লামাতাশী ইউনিয়নের বাসিন্দারা। এতে উভয় পক্ষে প্রায় ৩শ জন আহত হয়।
দুই দিনের সংঘর্ষে মিরপুর বাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় কমপক্ষে ৫ শতাধিক লোকজন আহত হয়েছেন। এ সময় কয়েকটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয় সংঘর্ষকারীরা। আহতদেরকে বাহুবল ও হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালসহ স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদিকে, সংঘর্ষের খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। যে কারণে দীর্ঘ পরপর দুটি এ সংঘর্ষ চলে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ২৬ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টায় উপজেলার মিরপুর বাজারে টাকা পাওনাকে কেন্দ্র করে একই উপজেলার লামাতাসি গ্রামের ট্রেইলার আলফু মিয়ার সঙ্গে বানিয়াগাঁও গ্রামের আকল আলীর ছেলে আল আমিনের কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি সমাধান করার জন্য বানিয়াগাঁও গ্রামের আ. শহিদ মিয়ার ছেলে সাদ্দাম মিয়া চেষ্টা করলে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায় আলফু মিয়ার লোকজন।
বিষয়টি উভয় পক্ষের গ্রামের লোকজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে মিরপুর বাজারে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। পরে লামাতাশি ও বানিয়াগাঁও গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র ও ইট-পাটকেল নিয়ে মিরপুর বাজারে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। উভয় পক্ষের লোকজন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লামাতাশি গ্রামের পক্ষে ৫ গ্রাম ও বানিয়াগাঁও গ্রামের মধ্যে ৮ গ্রামের লোকজন সংঘর্ষে জড়িত হয়।
দুই পরগনার লোকজনের মধ্যে চলে ইট পাটকেল নিক্ষেপ, টানা রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে এ সংঘর্ষ। আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য ফোটানো হয় পটকাও। এসময় মিরপুর বাজারের দোকান পাঠেও হামলা ভাঙচুর করে সংঘর্ষকারীরা। আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিভাতে চেষ্টা করে।
রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাহুবল উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাফেজ কামরুল ইসলাম, মিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামীম আহমদ, লামাতাশি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উস্তার মিয়াসহ স্থানীয় লোকজনের জোর চেষ্টার ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে উভয় পক্ষের লোকজনকে বাড়িতে পাঠানো হয়। পরের দিন আজ মঙ্গলবার স্যালিশ বিচার অমান্য করে দুই দল আবারও সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
এ বিষয়ে বাহুবল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান পরিস্থিতি এই মুহূর্তে শান্ত আছে। এ ঘটনায় কোন মামলা বা কেউ আটক নেই।
