বানিয়াচং প্রতিনিধি : বানিয়াচং ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর কার্যালয় থেকে স্টিলের আলমিরা উধাও হয়ে গেছে। সেই সাথে অফিসিয়ালি জরুরী কাগজপত্রও। জরুরী কাগজপত্র ও ব্যবহারের আলমিরা উধাও হওয়াতে কর্মরত কর্মকর্তাসহ শিক্ষকরা ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন। সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (৯ ডিসেম্বর) বানিয়াচংয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর শিক্ষকদের বেতনশীটে স্বাক্ষরের নিমিত্তে সমন্বয় সভা ছিল।
প্রয়োজনীয় কাজ শেষে দুপুরে উপজেলা কার্যালয়ে গেলে ফিল্ড সুপার ভাইজার মো: সুলায়মান ও নবনিযুক্ত মডেল কেয়ারটেকার মোঃ কয়েছ আহমেদ মাহদিসহ শিক্ষকগণ এসে দেখতে পান স্টিলের আলমিরা নেই। এসময় অনেক খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে আশপাশের বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসা করলে সাবেক মডেল কেয়ারটেকার আশিকুল ইসলাম নিয়েছেন বলে তারা জানায়। এসময় ফিল্ড সুপারভাইজার সাবেক মডেল কেয়ারটেকারকে কার্যালয়ের সরকারি আলমিরা নেওয়ার জন্য ভৎসনা করেন এবং ৩/৪ দিনের মধ্যে অক্ষতবস্থায় আলমিরাটি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।

ছবি : বানিয়াচং ইফা’র সাবেক মডেল কেয়ারটেকার আশিকের ফাইল ছবি
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ব্যক্তি বলেন, সাবেক মডেল কেয়ারটেকার আশিক এতদিন যাবত নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই খামখেয়ালিপনাভাবে অফিস চালিয়েছেন। অথচ ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ফাউন্ডেশন এর সকল সুযোগ-সুবিধা অসহায় আলেম-উলামাদের জন্য। কিন্তু ফাউন্ডেশন এর অধিকাংশ সুযোগ-সুবিধা এতদিন যাবত আশিক এবং তার অন্যায় কাজের দোসর কিছু শিক্ষকরা নিয়েছেন।এসব অন্যায় কাজের বাধা প্রদান করলেই শিক্ষকদের সে নানা হেনস্থাসহ কর্তৃপক্ষকে ভুল বুঝিয়ে চাকুরিচ্যুৎ করতেও দ্বিধা করতো না আশিক গংরা।
কথা হয় বানিয়াচং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিদায়ী মডেল কেয়ারটেকার ও বহু অপকর্মের হোতা বর্তমানে নবীগঞ্জ উপজেলা ইসলামিক ফাইন্ডেশনের মডেল কেয়ারটেকার আশিকুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান,আলমিরাটা আমি একটা ওয়ার্কশপে মেরামত করতে দিয়েছি। মেরামত করতে কি অফিস আপনাকে দায়িত্ব দিয়েছে ? আর আপনি এখন এই অফিসের দায়িত্বে নাই তাহলে কি করে এই আলমিরা নিলেন এই প্রশ্লের উত্তরে তিনি বলেন,সেটা ফিল্ড সুপারভাইজারকে জিজ্ঞাসা করেন। এই বলে ফোন কেটে দেন আশিক।
উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নবনিযুক্ত মডেল কেয়ারটেকার মো: কয়েস আহমেদ মাহদি জানান,আমি এখনো অফিস সমজিয়ে পাইনি। আলমিরা না পেয়ে সুভারভাইজার স্যার জিজ্ঞাসা করলে সে সংস্কার করার জন্য পাশের একটি ওয়ার্কসপে দিয়েছে বলে জানায়। তবে তাকে এটা সংস্কার করতে অফিস থেকে কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি। বেআইনিভাবে সে আলমিরা সরিয়েছে।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফিল্ড সুপারভাইজার মোঃ সুলায়মান দৈনিক আমার হবিগঞ্জকে বলেন,সাবেক কেয়ারকেটার আশিক অফিসের আলমিরা নিয়েছে সেটা সত্য। আলমিরা ফেরত দেয়ার জন্য আশিককে অফিস থেকে ফোন দেয়া হয়েছে। এ সময় সে আলমিরা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ফেরত দিবে মর্মে জানায়। তবে সেটা সংস্কার করতে তাকে বলা হয়নি। সে দায়িত্ব প্রাপ্তদের না বলে অফিস থেকে এটা নিতেও পারেনা।
উল্লেখ্য,ইসলামিক ফাউন্ডেশন বানিয়াচং উপজেলা সাবেক মডেল কেয়ারটেকার আশিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অফিস ফাঁকি, ইউএনও’র স্বাক্ষর ছাড়াই নিয়ম বহির্ভূতভাবে নিজের স্ত্রীকে চাকুরী পাইয়ে দেয়া, জাল সার্টিফিকেটে চাকুরী করা,ভূয়া সমিতির নামে লাখ লাখ টাকা আত্নসাত,ইকরা গণগ্রন্থাগার দেখিয়ে বহু বরাদ্দ পেঠে খজম করে নেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে আমার হবিগঞ্জ পত্রিকায় পর পর কয়েকটি সংবাদ প্রকাশ হয়। এসব অনিয়মের সংবাদ আমলে নিয়ে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে হবিগঞ্জ ইফা কার্যালয়। তদন্তে অনিয়মের সংবাদের আংশিক সত্যতা পেয়ে অবশেষে আশিককে নবীগঞ্জ উপজেলায় বদলী করা হয়েছে। এসব অভিযোগ ইফা’র জেলা কার্যালয় এবং বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তদন্ত হচ্ছে।