রায়হান উদ্দিন সুমন : বানিয়াচং উপজেলার ১০নং সুবিদপুর ইউনিয়নের আতুকুড়া-সুবিদপুর ইউনিয়নের মধ্যেবর্তী স্থানে নির্মিত এই ব্রিজটি যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসীর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই জরাজীর্ণ ব্রিজটি। বেহাল দশার কারণে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন শত শত কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে তাদের। উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের ধোপাজুরা খালের উপর এলজিইডির নির্মিত ব্রিজটি দীর্ঘ উনিশ বছর যাবত জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। ব্রিজের উপর সিমেন্টের তৈরি পাটাতন ধসে যাওয়ায় এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে এটি।
ব্রিজের উপর দিয়ে প্রতিদিনই শত শত কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে ছোট বড় নানান দূর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছেন। দুটি উপজেলার বাইপাস রাস্তা হিসেবে পরিচিত এই সংযোগকারী ব্রিজ। অথচ ব্রিজটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোন মাথা ব্যাথাই নেই। এই ব্রিজের দিয়ে খুব সহজেই পার্শ্ববর্তী উপজেলায় যাওয়া যায় বিধায় যানবাহন ও চলাচল করে বেশি। সীমাহীন এই দুর্ভোগে পড়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুইটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়,একটি কলেজ ও একটি মাদরাসার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। বিকল্প কোনো যাতায়াত পথ না থাকায়, মরণফাঁদ জেনেও পার হচ্ছেন গ্রামবাসী সহ কোমলমতি ছাত্র ছাত্রীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রিজের রেলিংয়ের দুইপাশ থেকে ভেঙে যাওয়াসহ উপরের সিমেন্টের তৈরি পাটাতন ধসে যাওয়ায় বাঁশ দিয়ে আটকানো রয়েছে রেলিং। এই রাস্তা দিয়ে চলাচলের একমাত্র যানবাহন ব্যাটারি চালিত টমটম চলাচলও বন্ধ হওয়ার পথে। ছোট ছোট যানবাহন গুলো যাত্রী নামিয়ে পারাপার হচ্ছে। ব্রিজটি মেরামতের জন্য এলাকাবাসী বিভিন্ন মানববন্ধনসহ মিছিল-মিটিং করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও দেখেও যেন না দেখার ভান করছেন। বর্তমানে ব্রিজটির অবস্থা খুবই করুন। যে কোনো সময় ভেঙে পরাসহ যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন ও নানান দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে পথচারী, শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী। শত শিক্ষার্থীর চলাচলের একমাত্র ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকরাও।
ওই এলাকার বাসিন্দা ইকবাল আহমেন জানান-এই ব্রিজে উঠলেই মনে হয় এই বুঁঝি ভেঙে পড়ল। বুকে ভয় নিয়ে আমরা এই ব্রিজ পারাপার হই। জরুরী ভিত্তিতে মরণ ফাঁদে পরিণত হওয়া এই ব্রিজটি দ্রুতু ভেঙে এখানে নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। শিক্ষার্থী সাইফুল আলম,শরিফুল আখঞ্জি বলেন, আমরা হবিগঞ্জে বৃন্দাবন কলেজে পড়ি। প্রতিদিন আমাদের কলেজে যেতে এই ব্রিজ ব্যবহার করতে হয়। আমরা ছাড়াও শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থী এই ব্রিজ ব্যবহার করে স্কুলে যায়। ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন আমরা এই ব্রিজ পাড় হই। এই ব্রিজটি ভেঙে নতুন ব্রিজ করা এখন এই এলাকার বাসিন্দাদের প্রধান দাবি।
এই এলাকার বাসিন্দা এমরান খান বলেন, ব্রিজটির অবস্থা খুবই খারাপ। প্রতিদিন বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে উদ্বিগ্ন থাকতে হয় আমাদের। মাঝে মাঝে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও হয়। কয়েকবার এই ব্রিজ থেকে গরু পার হতে গিয়ে নিচে পরে মারাও গেছে। পথচারীরাও ছোটখাত দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছেন। জনপ্রতিনিধিদের এ ব্যাপারে কোনো মাথা ব্যথা নেই। আমরা এলাকাবাসী এর জন্য মানববন্ধনও করেছি কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা প্রকৌশলী আল-নূর তারেক বলেন, ঝুঁকিপুর্ণ ব্রিজের তালিকা করে উপর মহলে পাঠানো হয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে কাজ হবে।
