ঘনিয়ে আসছে ঈদের প্রহর। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসবকে সামনে রেখে ক্রমান্বয়ে জমজমাট হয়ে উঠছে ঈদের বাজার। রমজানের শেষ দিকে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতিতে লক্ষ্য করা গেছে বানিয়াচংয়ের হাটবাজারগুলো। বড়বড় দোকান থেকে শুরু করে ফুটপাটের দোকানিরা কাটাচ্ছেন ব্যস্ত সময়।
মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নবিত্তদের ভিড় করতে দেখা যাচ্ছে এসব দোকানগুলোতে। মূলত ১৫ রমজানের পর থেকেই ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইফতারের পর বাজারের দোকানগুলোতে বাড়ছে ক্রেতার সংখ্যা। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে দোকানগুলোতে।
প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারের দোকানগুলোতে ভিড় রয়েছে। তবে পুরুষের চেয়ে নারী ক্রেতাই বেশি। ক্রেতাদের কাছে টানার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রেতাদের প্রতি লক্ষ্য রেখে দেশি ও বিদেশী বিভিন্ন পোশাকে সাজানো হয়েছে দোকানগুলোতে। দেশী ও বিদেশী শাড়ি, থ্রি পিসসহ নারীদের বিভিন্ন পোশাক বিক্রি হচ্ছে ধুম ধারাক্কা।
ফ্যাশনের পাশাপাশি ঐতিহ্যতে ও গুরুত্ব দিচ্ছেন নারীরা। সরেজমিনে দেখা গেছে, বাজারের অলিগলি দোকানসহ সব দোকানে ক্রেতাদের ভিড়। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখর বিভিন্ন দোকানগুলো।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বানিয়াচংয়ের বড়বাজার, গ্যানিংগঞ্জ বাজার, আদর্শবাজার, ও ৫/৬ নং বাজারের কাপড়র দোকান থেকে শুরু করে জুতা এবং কসমেটিকসের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। বিভিন্ন মার্কেটের দোকানগুলোতে পোশাক ও কসমেটিকসহ দেশি-বিদেশি সবধরণের জিনিসপত্র পাওয়া যাচ্ছে। ক্রেতারা দলবেঁধে এ দোকান থেকে ও দোকানে কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে পুরুষদের চেয়ে নারীদের ক্রেতার সংখ্যা বেশি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
কাপড়ের দোকানগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে দেশি- বিদেশি সুতি শাড়ি, টাঙ্গাইল, জর্জেটসহ বিভিন্ন ধরণের শাড়ি, থান কাপড়,শার্ট-প্যান্ট, ওড়না ইত্যাদি। তাছাড়া জুতা, কসমেটিকস ও গহনাসহ সবধরণের জিনিসপত্রের দোকানেই ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।
বিশেষ করে রাতে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। ইফতারের পর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি দেখা গেছে। ব্যস্ত সময় পার করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বিদ্যুতের ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে কিছুটা ব্যাঘাট ঘটছে ব্যবসার।
বিক্রেতারা জানান, থ্রিপিস,পাঞ্জাবি এবং মহিলা ও শিশু-কিশোরদের জামা কাপড় বেশি বিক্রি হচ্ছে। গরম বেশি হওয়ায় সুতি কাপড়ের চাহিদা বেশি বলেও জানান বিক্রেতারা। ক্রেতারা জানান, ঈদ উপলক্ষে জিনিসপত্রের দাম একটু বেশি। ঈদে নতুন কাপড়ের চাহিদা পূরন করতে পরিবারের সবাই মিলে পছন্দের কাপড়,শাড়ি, থ্রিপিচ ও পাঞ্জাবি কিনতে দোকানে ভীড় করছেন তারা।
কাপড়ের দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় একটু বেশি স্বীকার করে একটি কাপড়ের দোকানের স্বত্তাধিকারী কামাল মিয়া জানান, এ বছর কাপড়ের দাম কিছুটা বেশি হলেও স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাপড় ক্রয় করছেন ক্রেতারা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে বিক্রি। কোন ধরণের কাপড় বেশি বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের দোকানে লেডিস এবং সূতি কাপড়ের চাহিদা বেশি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর কাপড় বেশি বিক্রি হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
কসমেটিকস ব্যবসায়ী জাহিদ হাসান জানান, ক্রেতাদের ভালো সারা পাচ্ছি। আমাদের দোকানে মহিলা ক্রেতা বেশি। ফ্যাশনের দোকানগুলোতেও ক্রেতাদের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। এগুলোতে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে কিশোর-কিশোরীদের উপস্থিতি দেখা গেছে। দামদর করে পছন্দের কাপড় কিনছেন তারা। ফ্যাশনের দোকানগুলোতে পাঞ্জাবী, জিন্সপ্যান্ট, টি-শার্ট এবং শার্টের চাহিদা বেশি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে পিছিয়ে নেই জুতা এবং কসমেটিকস ব্যবসায়ীরাও। ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেনে জুতা ও কসমেটিকস ব্যবসায়ীরা। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর বিক্রিও বেশ ভালো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।
বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসাইন বলেন, পবিত্র ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে বাজারের ব্যবসায়ীদের ক্রয় বিক্রয়ের সুবিধার্থে আইনশৃঙ্খলা জোরদার করা হয়েছে। মোবাইল টিমসহ পুলিশের দুটি টিম মাঠে সার্বক্ষণিক পাহরা ও নজরদারি রাখছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পোশাকে এবং সাদা পোশাকে কাজ করছে পুলিশ। হাটবাজারের বড়বড় দোকানগুলোর সামনে এরই মধ্যে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। কেউ কোনো অভিযোগ দিলে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বাজার পরিদর্শন করে ব্যবসায়ীদের নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছেন বলেও জানান।