করোনায় বেড়েছে খরচ, বানিয়াচঙ্গে কোরবানির পশু নিয়ে শঙ্কায় খামারিরা। - আমার হবিগঞ্জ | Amar Habiganj
ঢাকাTuesday , 14 July 2020
আজকের সর্বশেষ সবখবর

করোনায় বেড়েছে খরচ, বানিয়াচঙ্গে কোরবানির পশু নিয়ে শঙ্কায় খামারিরা।

Link Copied!

 

শিশির, বানিয়াচং : দিন যতই সামনে এগোচ্ছে ততই ঘনিয়ে আসছে পবিত্র ঈদুল আযহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদ। আর তাই কোরবানির পশুকে ঘিরে খামারি থেকে শুরু করে গ্রামের হাট-বাজারেও ব্যস্ততা শুরু হয়েছে। তবে করোনার কারণে পশু কোরবানির হার কমে গেলে দর পড়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন খামারিরা।

যদিও লোকসানে পশু বিক্রি করতে রাজি নন তারা। তবে অন্তত ব্যয় উসুল হলেই পশু ক্রেতার হাতে তুলে দেয়ার চিন্তা করছেন খামারীরা। খামারিদের মতে, গত চারমাসে পশু লালন-পালনে ব্যয় এতটাই বেড়েছে যে দর নির্ধারণেও হিসেবে গড়মিল লেগে গেছে। সেই হিসেবে পশুর দাম বাড়াটাও স্বাভাবিক।

বানিয়াচং উপজেলার আমিরখানী এলাকার মোঃ নাইম লস্কর বলেন, করোনার কারণে গত ৪’মাস ধরে গরুর-খাদ্যের দাম অনেকটাই চড়া। আর সেই খরচ মিলাতে গেলে পশুর দামও কোরবানিতে কিছুটা বাড়বে। তবে সঠিক দর না পেলে লোকসান গুনতে হবে খামারিদের। তিনি আরও জানান, যে খৈল ৩০’থেকে ৩২’টাকায় কেনা হতো, তা এখন কিনতে হচ্ছে ৩৮-৩৯ টাকায়, যে ভুসি প্রতি বস্তা কিনতে পারতাম ১১০০ টাকায় কিন্তু সেটা এখন কিনতে হচ্ছে ১৩০০ টাকায়। তিনি বলেন, করোনায় খামারে পরিচ্ছন্নতা খরচও বেড়েছে দ্বিগুন। আগে যেখানে ১ কেজি জীবাণুনাশক প্রয়োজন হতো, সেখানে এখন দ্বিগুন লাগছে। আবার পশুকে রোগ বালাই মুক্ত রাখতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পরিচর্যাকারীর পেছনেও খরচ বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, পশুকে সতেজ ও রোগবালাইমুক্ত রাখতে হলে খামার বা আবাসস্থল অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে করোনার বর্তমান সময়ে খামারে সাধারণ মানুষের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি জীবাণুনাশকের ব্যবহারও বেড়েছে। তবে আশার কথা হচ্ছে, বানিয়াচঙ্গের বিগত সময়ের থেকে খামারিদের সংখ্যা বেড়েছে।

সেক্ষেত্রে কৃত্রিমভাবে পশুকে মোটাতাজা করার হার কমে গেছে। এখন সবাই প্রাকৃতিক নিয়মে পশু লালন-পালন এবং মোটাতাজা করছেন। এ কারণে তাদের গরুর স্বাস্থ্য যেমন ভালো, আয়ুকালও দীর্ঘস্থায়ী। লোকসান দিয়ে বিক্রি না করে পরের বছরের জন্য অপেক্ষায় রাখতে কোন কষ্ট হবে না। তাতে গরু দেখতে আরো ভালো হবে, পরিস্থিতি ঠিক হলে দামও ভালো পাবেন।

এদিকে একই উপজেলার বাসিন্দা মোঃ শাহ আলম মিয়া জানান, কোরবানির জন্য প্রতিবছর একটি গরু নিজেরাই লালন-পালন করেন, সঙ্গে একটি বা দুটি বিক্রির জন্য পালন করেন। এবারের মোট দুটি গরুর মধ্যে নিজেদের ১’টিও বিক্রির জন্য একটি পালন করছেন।

কিন্তু গেল ৪’মাসে এ দুটি গরুকে পালনে গুনতে হয়েছে প্রায় দ্বিগুন টাকা। শুধু খাবার নয়, পরিবহন খরচও বেড়েছে। সে হিসেব করলে গরুর যে দাম দাঁড়ায় সেই দামে বিক্রি করা আদৌ সম্ভব হবে কিনা জানেন না তিনি। তার ওপর কোরবানির হার কমে গেলে চাহিদা কমে পশুর দরও পড়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি। তাই খুবই চিন্তিত আছেন গরুর খামারিরা।